মঙ্গলবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:৩৬ অপরাহ্ন

সম্ভাবনা দেখাছে সাতক্ষীরার কুল চাষ, নেই সংরক্ষণ ব্যবস্থা

আকাশজমিন রিপোর্ট:
  • সর্বশেষ আপডেট : শুক্রবার, ১০ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩ ৫:৪২ pm

সাতক্ষীরা সংবাদদাতা: সাতক্ষীরার কৃষকরা অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি করে দেশকে এগিয়ে নিতে কৃষিকাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছে। বিশেষ করে বারোমাসি সবজি ও মৌসুমি ফল চাষ করে বেশ সাড়া ফেলতে শুরু করেছে এসব কৃষকরা। যা নিজেদের  নিজেদের অস্বচ্ছলতা কাটিয়ে জেলার পরিচিতি বাড়াচ্ছে।

বর্তমানে জেলাব্যাপী কুল বা বরইয়ের সিজন উৎপাদন চলছে। মৌসুমি চাষ হওয়ায় কুল সিজনে কৃষক মোটা অংকের মুনফা অর্জন করে থাকেন। ধীরে ধীরে সাতক্ষীরার কুল জেলার চাহিদা মিটিয়ে রাজধানী সহ দেশের বিভিন্ন বাজারে স্থান করে নিচ্ছে। খোঁজ নিয়ে দেখা মিলেছে জেলার বিভিন্ন এলাকার জমিরআইল, মাছের ঘেরের বেড়িবাধে ও প্রতিত জমিতে সারিবদ্ধ ভাবে চাষ করা হয় কুলগাছ। উন্নত প্রযুক্তির ফলে এ কুলগাছ বেশি বড় না হওয়ায় যেকোন স্থানে সহজে এ চাষ করা যায়।

তাছাড়া বেশিরভাগ গাছের উচ্চতা পাঁচফুট হওয়ায় সহজে দেখভাল করা যায়। গাছগুলো ছোট ছোট হওয়া কুল সংগ্রহ করা যায় সহজে। তাছাড়া কুলের ভারে গাছের ডাল মাটিতে নুুয়ে পড়ায় দরকার হয় মাচার। বর্তমান জেলার বিভিন্ন বাগান থেকে কুল সংগ্রহ শুরু করেছেন কৃষক।

এসব বাগানে গত কয়েক বছর ধরে বাণিজ্যিকভাবে চাষ হচ্ছে, নারকেলি, বিলাতি, আপেল, বলসুন্দরি, কাশমিরীসহ বিভিন্ন জাতের কুল। সুস্বাদু ও বিষমুক্ত হওয়ায় স্থানীয় বাজারের পাশাপাশি ঢাকা, খুলনাসহ সারাদেশের বাজারে এখানকার উৎপাদিত কুলের বেশ চাহিদা রয়েছে। এজন্য মৌসুমের শুরুতেই বাগান থেকে ৯০ থেকে ১০০ টাকা কেজি দরে কুল কিনছেন পাইকাররা। তবে, পাকা কুল সংরক্ষণের কোনো ব্যবস্থা না থাকায় দ্রুত পরিপক্ব কুল বাজারজাত করতে না পারলে অনেক সময় ক্ষতিগ্রস্ত হন বাগান মালিকরা।

ভৈরবনগর এলাকার কুলচাষি পাঞ্জাব মোড়ল জানান, ৯ বিঘা জমিতে কুল চাষ করেছি। এখন পর্যন্ত ২ লাখ টাকার মত কুল বিক্রয় করেছি। মিঠাবাড়ি এলাকার কুলের চাহিদা থাকায় এ বছর অনেক ব্যবসায়ী বাগান থেকে কুল ক্রয় করছেন। প্রথম দিকে ১৫০শ টাকা কেজি দরে কুল বিক্রয় করেছি। বর্তমানে ৮০/৯০ টাকা দরে বিক্রয় করছি।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, এ বছর সাতক্ষীরা জেলার সাতটি উপজেলায় মোট ৭৯৫ হেক্টর জমিতে কুল চাষ হয়েছে যা গত বছরের তুলনায় বেড়েছে ৪০শতাংশ।

কাশিপুর গ্রামের চাষী নুর ইসলাম বলেন, এ বছর ২৪ বিঘা জমিতে কুল চাষ করেছি। বিঘা প্রতি ৫০ হাজার টাকার মত খরচ হয়। নিয়মিত গাছের পরিচর্চা করলে অনেক বছর ধরে ফল পাওয়া যায়।

তবে, ন্যায্য মূল্য পেতে ও নিজেদের ভোগান্তি কমাতে জেলায় কুল সংরক্ষণ করার ব্যবস্থাসহ কুলের জন্য আলাদাভাবে বাজার গড়ে তুলে নিয়মিত বাজার মনিটরিং দাবি জানান কৃষকেরা।

সাতক্ষীরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ ড. মো. জামাল উদ্দিন বলেন, চলতি বছর পর্যন্ত সাতক্ষীরার সাত উপজেলার ৭৯৫ হেক্টর জমিতে বাণিজ্যিকভাবে কয়েক হাজার কুল বাগান গড়ে উঠেছে। বর্তমানে জেলায় বছরে গড়ে ১৬ থেকে ১৮ হাজার টন কুল উৎপাদিত হয়। যার গড় বাজার মূল্য শত কোটি টাকার ওপরে।

 

আকাশজমিন/এসআর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো পড়ুন
আর্কাইভ
© All rights reserved © Akashjomin

Developer Design Host BD