আকাশজমিন ডেস্ক: ইলিশ মাছ ধরতে ২০১৭ সালে সমুদ্রে পাড়ি দিয়েছিলেন মোহাম্মদ রাশেদ (২৮)। বঙ্গোপসাগরে ঢেউয়ে ট্রলারডুবিতে ২০ জন জেলের সঙ্গে নিখোঁজ হন রাশেদও।
রাশেদ নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়নের ৬নং আদর্শ গ্রামের কালাম হুজুরের বাড়ির আবুল কালাম ও হালিমা খাতুন দম্পতির দ্বিতীয় ছেলে।
ভারতে ট্রলার মিললে ভেতরে ৬ মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তবে তখনও খোঁজ জানা যায়নি তার। এরপর দীর্ঘ ৬ বছর সেই ট্রলারডুবিতে নিখোঁজ ১৪ জনের খোঁজ মেলেনি।
তবে কাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সবাইকে অবাক করে দিয়ে হাতিয়ার নিঝুম দ্বীপ ইউনিয়নের নিজ বাড়িতে ফিরে আসেন রাশেদ। যদিও ফিরে আসার পর কারো সঙ্গে কথা বলছেন না তিনি, কেবলই তাকিয়ে আছেন।
জানা যায়, ২০১৭ সালে জাফর সারেংয়ের সঙ্গে মাছ ধরতে বঙ্গোপসাগরে যান রাশেদসহ ২০ জন জেলে। ট্রলারডুবির ঘটনায় ২০ জেলের কাউকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। বেশ কিছুদিন পর ভারতীয়রা ট্রলার উদ্ধার করলে ৬ জনের মরদেহ ট্রলারের ভেতরে খুঁজে পাওয়া যায়। তবে দীর্ঘ ৬ বছরে বাকি নিখোঁজ ১৪ জনের খোঁজ মেলেনি।
নিখোঁজ জেলেদের পরিবার ধরেই নিয়েছিলেন তারা হয়তো বেঁচে নেই। কিন্তু গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নিঝুম দ্বীপ ইউনিয়নে ফিরে আসেন রাশেদ। কিন্তু কোনো কথা বলতে পারছেন না তিনি। এ সময় রাশেদের বাবা আবুল কালাম জন্ম দাগ দেখে নিশ্চিত করেন। রাশেদকে পেয়ে তার মা, ভাই-বোন কান্নায় ভেঙে পড়েন।
রাশেদের বাবা আবুল কালাম বলেন, বিয়ের ৩ মাস ১০ দিনের মাথায় রাশেদের ট্রলারডুবিতে নিখোঁজ হওয়ার ঘটনা ঘটে। দীর্ঘ ৬ বছর ১ মাস ৭ দিন পর সে বাড়িতে এসেছে। সে কথা না বলতে পারলেও আমরা তাকে চিনেছি। আমার সন্তানকে আমি ফিরে পেয়ে আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করছি।
একই এলাকার বাসিন্দা মো. বেলাল বলেন, সবাই ভেবেছিল রাশেদ আর বেঁচে নাই। আল্লাহর ইচ্ছায় রাশেদ পরিবারের কাছে এসেছে।
নিঝুম দ্বীপ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল আফছার দিনাজ বলেন, রাশেদকে ফিরে পেয়ে পরিবারটি আনন্দে আত্মহারা। এলাকাবাসী এক নজর রাশেদকে দেখতে বাড়িতে ভিড় জমাচ্ছে। সে এতদিন কোথায় ছিল তা জানা যায়নি।
আকাশজমিন/এসআর