ঠাকুরগাঁও সংবাদদাতা: মাত্র তিন বছর বয়সে বাবাকে হারায় রমজান আলী। চার সন্তান নিয়ে দিশেহারা তার মা। সন্তানদের ভরণপোষণ জোগাতে হাড়ভাঙা খাটুনি করতেন তার মা। পরিবারের কষ্ট লাঘবে মায়ের সঙ্গে কাজ শুরু করে রমজান।
পারিবারিক অসচ্ছলতা আর অভাবে পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়া ছিল বেশ কষ্টকর। অন্যের বাড়িতে কাজ করে যা আয় হতো তা থেকে কিছু টাকা দিয়ে পড়াশোনার খরচ চালাত রমজান। এসএসসির আগের পড়াশোনার খরচ চালাতে খুব বেশি কষ্ট না হলেও পরে হিমশিম খেতে হয়েছে তাকে। লাজলজ্জা ভুলে ভ্যান চালানো শুরু করে সে। চালিয়ে যায় পড়াশোনা। এবারের এইচএসসি পরীক্ষার ফলে জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে সে।
রাণীশংকৈল উপজেলার বাচোর ইউনিয়নের মীরডাঙ্গী গ্রামের মৃত আবু তাহেরের ছেলে রমজান আলী। চার ভাই-বোনের মধ্যে সবার ছোট সে। বাড়ির পাশে মীরডাঙ্গী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসিতে জিপিএ-৪.১১ ও রাণীশংকৈল ডিগ্রি কলেজ থেকে মানবিক বিভাগে জিপিএ-৫ পেয়েছে সে। তার ফলে খুশি পরিবার ও স্থানীয়রা।
স্কুলশিক্ষক শরিফুল ইসলাম বলেন, তার জীবনটা একটা সংগ্রাম। অনেক কষ্ট করে সে অন্যের বাড়িতে কাজ করে। ভ্যান চালিয়ে ভালো ফল করেছে। তার ফলে আমরা অনেক খুশি। আমরা তার পাশে ছিলাম। আগামীতেও তার পাশে দাঁড়াব। সেই সঙ্গে সবাইকে তার পাশে দাঁড়ানোর অনুরোধ করছি।
রমজান আলী বলে, পরীক্ষা শেষ করার পর আমি ঢাকায় চলে যাই। গার্মেন্টসে কাজ শুরু করি। এখনো গার্মেন্টস কর্মী হিসেবে কর্মরত আছি। ছোটবেলা থেকেই বাবার আদর পাইনি। মা অনেক কষ্ট করে আমাকে লালন-পালন করেছেন। মায়ের সঙ্গে কাজ করে নিজের খরচ ও পড়াশোনার খরচ চালিয়েছি। তবুও পিছপা হইনি। স্বপ্ন ছিল একদিন ভালো ফল করে একটি মানসম্মত বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করব। আজকে একটা মনের আশা পূরণ হলো।
আকাশজমিন/এসআর