আকাশজমিন ডেস্ক: কৌশলগত দিক থেকে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ইউক্রেনীয় শহর বাখমুতের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে তুমুল যুদ্ধ চলছে। রুশ সেনা ও রাশিয়ার ভাড়াটে বাহিনী ওয়াগনার গ্রুপের যৌথ হামলায় টালমাটাল হয়ে পড়েছেন ইউক্রেনের সেনারা।
আলজাজিরা জানিয়েছে, তীব্র যুদ্ধের মধ্যে টিকতে না পেরে বাখমুতে থাকা সাধারণ মানুষ পালিয়ে যাচ্ছেন। পায়ে হেঁটে তাদের পালাতে সাহায্য করছে ইউক্রেনীয় বাহিনী। কারণ যানবাহনে করে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যাওয়ার মতো পরিস্থিতি নেই।
খবরে বলা হয়েছে, শনিবার বাখমুতের বাইরে একটি অস্থায়ী সেতু পার হওয়ার চেষ্টাকালে গোলাগুলিতে একজন নারী নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া দুজন পুরুষ গুরুতর আহত হয়েছেন। ইউক্রেনীয় সেনারা তাদের পালাতে সহায়তা করছিল।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ইউক্রেনের একজন সেনা প্রতিনিধি বার্তা সংস্থা এপিকে বলেছেন, বেসামরিক নাগরিকদের জন্য যানবাহনে শহর ছেড়ে যাওয়া এখন খুবই বিপজ্জনক। এর পরিবর্তে লোকজনকে পায়ে হেঁটে পালিয়ে যেতে হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, বিগত কয়েক মাস ধরে বাখমুত শহরকে হামলার লক্ষ্যবস্তু বানিয়েছেন রুশ সেনাবাহিনী ও ভাড়াটে বাহিনী ওয়াগনার গ্রুপের সদস্যরা। তাদের তীব্র যৌথ হামলার মুখে টিকতে পারছে না ইউক্রেনীয় বাহিনী। এর ফলে শহরটির মূল অংশের কাছাকাছি চলে এসেছে রাশিয়ান বাহিনী।
ইউক্রেনের সামরিক গোয়েন্দা কর্মকর্তা এবং অন্যান্য পশ্চিমা বিশ্লেষকদের মতে, বিগত ৩৬ ঘণ্টার মধ্যে ইউক্রেনীয় ইউনিটগুলো বাখমুতের ঠিক বাইরে দুটি মূল সেতু ধ্বংস করেছে, যার মধ্যে একটি চাসিভ ইয়ারের সঙ্গে সংযুক্ত করেছে। সেই সঙ্গে এই সেতুটি ছিল বাখমুতের সঙ্গে আশপাশের এলাকাগুলোর যোগাযোগের সর্বশেষ ও একমাত্র রুট।
ব্রিটেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইউক্রেনীয় সৈন্যরা ওই শহরের পশ্চিমে নতুন পরিখা খনন করেছে এবং তাদের অভিজাত ইউনিটগুলোকে সেখানে পাঠানো হয়েছে।
তবে বাখমুতের ডেপুটি মেয়র অলেক্সান্ডার মার্চেনকো জোর দিয়ে বলছেন, রুশ সৈন্যরা এখনো শহরটি দখল করতে পারেনি।
বাখমুতের ডেপুটি মেয়র জানিয়েছেন, শহরের শেষ চার হাজার বেসামরিক নাগরিক গ্যাস, বিদ্যুৎ বা পানিবিহীন অবস্থায় আশ্রয়কেন্দ্রে লুকিয়ে রয়েছেন। শহরটির একটি বিল্ডিংও অক্ষত নেই এবং প্রচণ্ড গোলাবর্ষণে পুরো শহরটি ধূলিসাৎ হয়ে গেছে।
রাশিয়ান বাহিনী গত কয়েক দিন ধরে বাখমুতের দিকে অগ্রসর হয়েছে। তবে শহরটির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বিগত কয়েক মাস ধরে তীব্র গোলাবর্ষণ এবং বিধ্বস্ত শহরটির চারপাশে দুই পক্ষের লড়াই চলছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, দোনেৎস্ক অঞ্চলের উত্তর-পূর্ব দিকে অবস্থিত গুরুত্বপূর্ণ এ শহরটির নিয়ন্ত্রণ নিতে পারলে রাশিয়ার জন্য যুদ্ধে বিজয় লাভ করা অনেকটা সহজ হবে। শহরটিকে নিজের দখলে আনা রাশিয়ার জন্য সাম্প্রতিক মাসগুলোতে এক বিরল সাফল্য বলে বিবেচিত হবে।
আকাশজমিন/এসআর