রাজশাহী প্রতিনিধি।। বাসের সিটে বসা নিয়ে দ্বন্দ্বে স্থানীয়দের সঙ্গে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ চলছে। শনিবার (১১ মার্চ) সন্ধ্যা ৭টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিনোদপুর গেট অবরোধ করে দুই পক্ষ সংঘর্ষে জড়ায়। এ সময় বিনোদপুর গেট পুলিশ বক্সে আগুন দেন স্থানীয়রা। পুড়িয়ে দেওয়া হয় দুটি মোটরসাইকেল। সংঘর্ষে অন্তত অর্ধশত শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বগুড়া থেকে বাসে করে রাজশাহী আসছিলেন সমাজবিজ্ঞান বিভাগের এক শিক্ষার্থী। সিটে বসাকে কেন্দ্র করে তার সঙ্গে ঝামেলা হয় একজনের। পরে বাসটি বিনোদপুর বাজারে আসলে বাস আটকে চালককে জিজ্ঞাসাবাদ করেন শিক্ষার্থীরা। একপর্যায়ে এক দোকানি এসে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বাজে আচরণ করেন। পরে ওই ব্যক্তির সঙ্গে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। শিক্ষার্থীদের দাবী, স্থানীয়রা তাদের ওপর পেট্রোল বোমা ও ককটেল নিক্ষেপ করে। এ নিয়ে ক্যাম্পাস ও পাশের বিনোদপুর এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। রাত সাড়ে ৭টা পর্যন্ত ঘটনাস্থলে পুলিশকে আসতে দেখা যায়নি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শনিবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিনোদপুর গেটে বাসের ভাড়া নিয়ে বাকবিতণ্ডা হয় রাবির সমাজবিজ্ঞান বিভাগের এক শিক্ষার্থীর। এ সময় বাসের লোকজনের পক্ষ হয়ে ওই শিক্ষার্থীর সঙ্গে ঝগড়ায় জড়ান স্থানীয় এক যুবক। খবর পেয়ে বিভাগের ৩০/৪০ জন শিক্ষার্থী সেখানে উপস্থিত হলে পরিস্থিতি থমথমে আকার ধারণ করে। পরিস্থিতি শান্ত করতে রাবি ছাত্রলীগ সভাপতি গোলাম কিবরিয়া সেখানে উপস্থিত হন। এ সময় স্থানীয়রা ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের লক্ষ্য করে ইট ছুঁড়লে তারা ক্যাম্পাসে অবস্থান নেন। এরপর শুরু হয় দফায় দফায় সংঘর্ষ। স্থানীয়রাও দলবদ্ধ হয়ে রাবি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। এ সময় তারা ককটেল বিস্ফোরণ ও রাবি শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য করে পেট্টোল বোমাও নিক্ষেপ করে। খবর পেয়ে মতিহার, বঙ্গবন্ধু, শের-ই-বাংলা, লতিফ, শাহ মখদুম, আমীর আলী হলের শিক্ষার্থীরা সেখানে জড়ো হয়। তাদের ওপর ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক থেকে ক্রমাগত ইট ছুঁড়তে থাকে স্থানীয়রা। এসময় স্থানীয়দের সঙ্গে কয়েক দফা ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ঘটে।
সংঘর্ষে আহত শিক্ষার্থীদের মধ্যে একজন হলেন ছাত্রলীগ নেতা ও ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী মো. সোলাইমান। আহতদের মধ্যে দুজন বিশ্ববিদ্যালয় মেডিক্যাল সেন্টারে চিকিৎসা নেন এবং একজনকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অন্যরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, তাৎক্ষণিকভাবে তারা বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টরিয়াল বডিকে ঘটনাটি জানিয়েছেন। কিন্তু প্রায় এক ঘণ্টা ধরে সংঘর্ষ চললেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ আসেনি। রাবি প্রশাসনের পক্ষ থেকেও কোনো সাড়া মেলেনি। এ খবর লেখা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় ও বিনোদপুর এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।
আর/জে