আন্তর্জাতিক ডেস্ক
ওমান সাগরে চীন, রাশিয়া ও ইরান যৌথ সামরিক মহড়া শুরু করেছে। ১৫ই মার্চ থেকে বুধবার থেকে ১৯ মার্চ রোববার পর্যন্ত স্থায়ী এই মহড়ার অন্যতম লক্ষ্য হবে সংশ্লিষ্ট সামরিক বাহিনীগুলোর ‘যৌথ পরিকল্পনা’ পরিচালনা, দিবা ও নৈশকালীন গোলা নিক্ষেপ। এছাড়াও জব্দ করা জাহাজ উদ্ধার এবং দুর্যোগে পড়া জাহাজকে সহায়তা নিয়েও মহড়া চালাবে তিন নৌবাহিনী। জলদস্যু মোকাবেলা, সমুদ্রে সন্ত্রাসবাদ দমন, নৌবাহিনীর উদ্ধার ও ত্রাণ তৎপরতার বিষয়ে অভিজ্ঞতা বিনিময়ের খুব ভালো সুযোগ এনে দিচ্ছে এ ধরনের যৌথ অনুশীলন বা মহড়া।
ভারত মহাসাগরের উত্তরাঞ্চলে তথা ওমান সাগরের মহড়ায় যোগ দিয়েছে চীনের গাইডেড ক্ষেপণাস্ত্রবাহী ডেস্ট্রয়ার ন্যানিং। রাশিয়া, চীন ও ইরান ২০১৯ ও ২০২২ সালেও একই ধরনের মহড়া চালিয়েছিল।
চীন ও রাশিয়ার নৌবহর ছাড়াও এ মহড়ায় ইরানের ইসলামী বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর নৌ শাখা এবং ইরানের নৌবাহিনীর মেরিন এবং এয়ারবোর্ন ইউনিট অংশ নিচ্ছে।
চীনের মধ্যস্থতায় ইরান ও সৌদি আরবের মধ্যে অপ্রত্যাশিত সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার প্রেক্ষাপটে এই মহড়া চলছে।চীন ক্রমবর্ধমান হারে মধ্যপ্রাচ্যের বৃহত্তম তেল ক্রেতায় পরিণত হচ্ছে। পশ্চিম এশিয়া অঞ্চলে রাশিয়া, চীন ও ইরানের প্রভাব ক্রমেই বাড়ছে। তাই এ অঞ্চলের নৌ-নিরাপত্তা এ তিন দেশ ও তাদের মিত্র দেশগুলোর জন্য বেশ জরুরি।
এ ছাড়াও এমন সময়ে এই নৌ-মহড়া চলছে যখন মার্কিন সরকার এ অঞ্চলে তার মিত্র দেশগুলোকে নিয়ে ইরান-বিরোধী ন্যাটো জোট ও বিশেষ নৌ-জোট গঠনের চেষ্টা করে আসছে।
উল্লেখ্য ইরানের নৌবাহিনী এখন বিশ্বের অন্যতম সেরা ও তৎপর নৌবাহিনীগুলোর অন্যতম। ইরানের হাতে রয়েছে বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুতগতিসম্পন্ন টর্পেডো বা পানির নিচে ব্যবহারযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র। নানা ধরনের অত্যাধুনিক ইলেকট্রনিক-সাজ-সরঞ্জাম, হেলিকপ্টার, ড্রোন, ক্ষেপণাস্ত্র ও রাডার-সজ্জিত ইরানি যুদ্ধ-জাহাজগুলোর গতিও বেশ তীব্র।
ইরান নানা ধরনের সাবমেরিন বা ডুবোজাহাজও তৈরি করছে। ভূমধ্যসাগর ও আটলান্টিক মহাসাগরসহ ইরানের নৌবহরগুলো বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ নানা অঞ্চলে টহল দিয়েছে। ইরান সম্প্রতি তার নৌবাহিনীতে যুক্ত করেছে চালকবিহীন স্বয়ংক্রিয় দ্রুতগতির নৌযান। এসব নৌযান ক্ষেপণাস্ত্র বহনে সক্ষম। এ ছাড়াও ইরান সম্প্রতি এমন দূরপাল্লার গাইডেড ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করেছে যে ক্ষেপণাস্ত্র দেড় হাজার বা ১৬০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত চলমান রণতরীতে আঘাত হানতে সক্ষম।
ইরান, চীন ও রাশিয়ার যৌথ নৌ-মহড়া এই তিন বড় শক্তির মধ্যে ক্রমবর্ধমান সামরিক সহযোগিতার দৃষ্টান্ত। এ ধরনের মহড়া শত্রুদের জন্য বড় ধরনের হুঁশিয়ারি ও বন্ধু বা প্রতিবেশী দেশগুলোর জন্য শান্তির বার্তা বহন করছে। আকাশ জমিন / আরজে