রবিবার, ০৩ নভেম্বর ২০২৪, ০১:১১ অপরাহ্ন

দুই জেলায় ১২০ টাকায় পুলিশে চাকরি পেলেন ২১৬ জন

আকাশজমিন রিপোর্ট:
  • সর্বশেষ আপডেট : সোমবার, ২০ মার্চ, ২০২৩ ১০:২৩ am

আকাশজমিন ডেস্ক:
মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে ১২০ টাকা ব্যয়ে বগুড়ায় ১২৯ জন ও জামালপুরে ৮৭ জন তরুণ-তরুণী পুলিশ কনস্টেবল পদে চাকরি পেয়েছেন। রোববার রাত সাড়ে ১১টার দিকে জেলার পুলিশ সুপার এ তথ্য জানান। প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-
বগুড়া: বগুড়ায় ১২৯ জন তরুণ-তরুণী পুলিশ কনস্টেবল পদে চাকরি পেয়েছেন। মুক্তিযুদ্ধে প্রথম প্রতিরোধকারী বাহিনী বাংলাদেশ পুলিশের ভাবমূর্তি অব্যাহত রাখতে আন্তরিকতা ও নিষ্ঠার সঙ্গে গোয়েন্দা নজরদারি অব্যাহত রেখে শুধু মেধা এবং প্রয়োজনীয় যোগ্যতার ভিত্তিতেই এবারে পুলিশ কনস্টেবল নিয়োগ সম্পন্ন করা হয়েছে। এই নিয়োগের ক্ষেত্রে কোথাও যাতে কোনও আর্থিক লেনদেন বা অন্য কোনও অনিয়ম না হয় সে ব্যাপারে গোপন তৎপরতা অব্যাহত রেখেই কনস্টেবল নিয়োগে সুষ্ঠুভাবে যাচাই-বাছাই করা হয়েছে। পুলিশ কনস্টেবল নিয়োগের প্রায় কয়েক মাস আগে থেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারণা, লিফলেট বিতরণ এবং জেলার বিভিন্ন স্থানে ব্যানার টাঙানো হয়। এবার আর্থিক লেনদেনসহ সব অনিয়ম ও সুপারিশ পরিহার করে সুষ্ঠুভাবে পুলিশ কনস্টেবল নিয়োগের বিষয়টি সম্পন্ন করতে ব্যাপক প্রচারণা চালানো হয়। জানা যায়, ১২৯ জন নিয়োগপ্রাপ্ত কনস্টেবলের মধ্যে অধিকাংশ অতিদরিদ্র পরিবার থেকে এসেছে। এর মধ্যে ১১০ জন পুরুষ সদস্য ও ১৯ জন নারী সদস্য নিয়োগ পেয়েছেন। সদ্য নিয়োগপ্রাপ্তদের শুভেচ্ছা জানানোর সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন নওগাঁ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) গাজিউর রহমান, নাটোর জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বড়ইগ্রাম সার্কেল) মো. রাজীব, বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) শরাফত ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) হেলেনা আকতার, সহকারী পুলিশ সুপার (শিবগঞ্জ-সোনাতলা) তানভীর হাসান। উল্লেখ্য, গত ২ মার্চ থেকে পুলিশ কনস্টেবলের নিয়োগ প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে লাইনে দাঁড়ায় জেলার ১২ উপজেলার ৩ হাজার ৩১৭ জন চাকরিপ্রত্যাশী তরুণ-তরুণী। পরে শারীরিকভাবে যোগ্য ৩২৭ জন প্রার্থীকে মৌখিক পরীক্ষার জন্য নির্বাচিত করা হয়।
জামালপুর: জামালপুরে পুলিশে চাকরি পেয়েছেন ৮৭ নারী-পুরুষ। রোববার রাত ১২টার দিকে জামালপুর পুলিশ লাইন্সে পুলিশ কনস্টেবল পদে চাকরি প্রার্থীদের চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণা করা হয়। এ সময় নির্বাচিতদের অভিনন্দন জানান পুলিশ সুপার নাছির উদ্দিন। সদর উপজেলার টিকরাকান্দি গ্রামের সোমাইয়া আক্তার রিচি। বাবা হাফিজুল ইসলাম বিনা বেতনে স্থানীয় একটি স্কুলের নৈশপ্রহরী। পরীক্ষা কেন্দ্রে যাতায়াতের জন্য বান্ধবীর কাছ থেকে ৪০০ টাকা ধার নিয়ে জামালপুর পুলিশ লাইন্সে দাঁড়িয়েছিলেন রিচি। পুলিশ কনস্টেবল পদে চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত হওয়ার ঘোষণা শোনে আনন্দে কেঁদে ফেলেন তিনি। বলেন সংসারে আয় রোজগারের কেউ নেই। তাই চাকরিটা আমার খুব প্রয়োজন ছিল। ভেলামারি গ্রামের মাহমুদ হাসান সোহানের মা-বাবা মারা গেছেন কয়েক বছর আগে। ছোট বোন সোমাইয়াকে নিয়ে দুই ভাই-বোনের সংসার চলতো তার প্রাইভেট পড়ানোর টাকায়। ১২০ টাকায় পুলিশে চাকরি পেয়ে সোহান আনন্দে আত্মহারা। তারতাপাড়া গ্রামের বর্গা চাষি আকরাম হোসেনের ছেলে রাশেদুল কনস্টেবল পদে চাকরির জন্য আবেদন করেছিলেন তিনবার। কিন্তু মৌখিক পরীক্ষায় এসে বাদ পড়ে যান। তবে হতাশ হননি। কঠোর পরিশ্রম আর চূড়ান্ত প্রস্তুতি নিয়ে আবারও অংশ নেন। অবশেষে সফলতা পান রাশেদুল। জেলা পুলিশ সূত্র জানায়, কনস্টেবল নিয়োগ পাওয়ার জন্য জেলায় ২ হাজার ৯৫৪ জন চাকরি প্রত্যাশী আবেদন করেন। শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর তাদের লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নেন ১৬৮ জন, উত্তীর্ণ ৮৭ জন। নিয়োগপ্রাপ্তদের মধ্যে কৃষক, দিনমজুরসহ হতদরিদ্র পরিবারের সন্তান রয়েছে।
আকাশজমিন/আরজে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো পড়ুন
আর্কাইভ
© All rights reserved © Akashjomin

Developer Design Host BD