আকাশজমিন ডেস্ক
ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ী বলেছেন, শত্রুরা এদেশের ইসলামি বিপ্লবের পরিচিতি মুছে ফেলতে চায়। গতকাল ফার্সি নতুন বছর বা নওরোজ উপলক্ষে ইরানের পূর্বাঞ্চলীয় মাশহাদ নগরীতে হাজার হাজার মানুষের এক বিশাল সমাবেশে ভাষণ দিতে গিয়ে একথা বলেন। সর্বোচ্চ নেতা বলেন, আমরা দেশে পরিবর্তন আনতে চাই এবং ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের শত্রুরাও পরিবর্তনের কথা বলে। তবে আমরা যে পরিবর্তন চাই সেটি তাদের আকাঙ্ক্ষার সরাসরি বিপরীত। শত্রুরা যে পরিবর্তনের কথা বলে সেটি হচ্ছে, ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের পরিচিতি মুছে ফেলা। এখানে ইসলামি শাসনব্যবস্থা না রাখা। শত্রুরা ইসলামি বিপ্লবের মহান নেতা ইমাম খোমেনীর (রহ.) নাম এদেশের ইতিহাস থেকে মুছে ফেলতে চায়। ইসলামি বিপ্লবের সঙ্গে জড়িত দিবসগুলোকে ক্যালেন্ডার থেকে মুছে ফেলতে চায়। সর্বোচ্চ নেতা বলেন, সার্বিকভাবে তারা ইসলামি ইরানের শক্তিমত্তার জায়গাগুলোকে শেষ করে দিতে চায়। তারা ইরানে এমন এক সরকারকে ক্ষমতায় আনতে চায় যে সরকার সাম্রাজ্যবাদীদের তাবেদারী করবে। এজন্য তারা পশ্চিমাদের প্রতারণামূলক ‘গণতন্ত্র’কে এখানে বাস্তবায়ন করতে চায় যে গণতন্ত্রের চালিকাশক্তি তাদের হাতে থাকবে। আর সেই সরকারের মাধ্যমে এদেশের সম্পদ লুট করতে চায় সাম্রাজ্যবাদী শত্রুরা। আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ী বলেন, পক্ষান্তরে আমরা যে পরিবর্তন চাই তা হচ্ছে, আমাদের রাষ্ট্রব্যবস্থার দুর্বল ও ত্রুটিপূর্ণ স্থানগুলোতে পরিবর্তন। যেসব স্থানের কারণে দেশের অগ্রগতি বারবার আটকে যায় আমরা সেসব স্থানে পরিবর্তন এনে দেশের উন্নতিকে ত্বরান্বিত করতে চাই।
ইরানি জনগণকে ঈমানদার ও আত্মবিশ্বাসী উল্লেখ করে সর্বোচ্চ নেতা বলেন, এদেশের জনগণ কয়েক দশক ধরে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী দেশগুলোর শত্রুতা, নিষেধাজ্ঞা ও নানা ধরনের আক্রমণের মোকাবিলা করে টিকে রয়েছে। বিশ্বের অন্য কোনো দেশ কিংবা বিপ্লবের ক্ষেত্রে এরকম দেখা যায়নি। বিশ্বের ইতিহাসে এটি নজিরবিহীন ঘটনা। বিদেশিদের চাপিয়ে দেয়া সাম্প্রতিক সহিংসতার সময় আমেরিকা ও ইউরোপের বেশিরভাগ দেশ একত্র হয়ে ইরানের ক্ষতি করার চেষ্টা করেছে। তারা চেয়েছিল অন্তত ইসলামি শাসনব্যবস্থাকে দুর্বল করে ফেলতে। কিন্তু সেটিও হয়নি। বিগত ১১ ফেব্রুয়ারি ইসলামি বিপ্লবের বিজয়বার্ষিকীতে ইরানি জনগণ নজিরবিহীনভাবে সাড়া দিয়ে শত্রুদের মুখে চপেটাঘাত করেছে।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি খাতসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ খাতে ইরানের চোখ ধাঁধানো সাফল্যের কথা উল্লেখ করে সর্বোচ্চ নেতা বলেন, এসব সাফল্যের কথা বারবার বলা হোক তা শত্রুরা চায় না। আর এসব সাফল্য অর্জিত হয়েছে আমেরিকার নিষেধাজ্ঞা ও ‘সর্বোচ্চ চাপ প্রয়োগের’ মধ্যেই। মার্কিনীরাই বলেছে, তারা ইরানের ওপর নজিরবিহীন অর্থনৈতিক চাপ সৃষ্টি করেছে। হাজারটা মিথ্যার মধ্যে এই একটি কথা তারা সত্য বলেছে। সত্যি সত্যিই ইরানের ওপর নজিরবিহীন চাপ তারা সৃষ্টি করেছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও তারা ইরানের অগ্রগতি ও উন্নতি থামিয়ে রাখতে পারেনি।
আর/জে