আকাশজমিন ডেস্ক
ফ্রান্সে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসসহ বিভিন্ন শহরে এ সংঘর্ষ হয়। ফ্রান্স সরকারের প্রস্তাবিত অবসর নীতিমালার বিরুদ্ধে তিন মাস ধরে চলমান বিক্ষোভে এটিকে সবচেয়ে বড় সহিংসতার ঘটনা বলে উল্লেখ করেছে এএফপি।
গত জানুয়ারির মাঝামাঝিতে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁ সরকারি কর্মচারীদের অবসরে যাওয়ার বয়স বাড়ানোর উদ্যোগ নেন। অবসরের বয়স ৬২ থেকে বাড়িয়ে ৬৪ করার পরিকল্পনা হয় এবং পার্লামেন্টে কোনো ধরনের ভোটাভুটি ছাড়াই এ সংস্কার পরিকল্পনা বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত হয়। এর প্রতিবাদে তিন মাস ধরে ফ্রান্সের রাস্তায় বিক্ষোভ চলছে। গতকাল বৃহস্পতিবার বিক্ষোভ বড় ধরনের সহিংসতায় রূপ নেয়। পেনশনের বয়স বাড়ানোর সিদ্ধান্তে অনড় ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট মাক্রোঁ। প্রতিবাদে দেশজুড়ে চলছে বিক্ষোভ, ধর্মঘট। জায়গায় জায়গায় রাস্তা অবরোধ করেছেন বিক্ষোভকারীরা। বৃহস্পতিবার (২৪ মার্চ) ফ্রান্সজুড়ে ধর্মঘট পালন করে শ্রমিক ইউনিয়নগুলো। অধিকাংশ বড় বিক্ষোভই শান্তিপূর্ণ ছিলো। কিন্তু প্যারিসসহ বেশ কিছু শহরে প্রতিবাদ শেষ পর্যন্ত সহিংস হয়ে ওঠে। প্যারিসে পুলিশকে লক্ষ্য করে প্রতিবাদকারীরা পাথর ছোড়ে। পুলিশও লাঠি চালায় এবং কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটায়। বোর্ডোতে বিক্ষোভকারীরা সিটি হলের প্রবেশপথে আগুন ধরিয়ে দেয়। তাতে ঐতিহাসিক হেরিটেজ ভবনের কিছুটা ক্ষতি হয়েছে। বেশ কিছু শহরে পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটিয়েছে, জল কামান ব্যবহার করেছে। ফ্রান্সের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জেরাল্ড ডারমানিন জানান, ১৪৯ জন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। ৪৫৭ জন বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বিক্ষোভকারীদের মধ্যেও অনেকে আহত হয়েছেন। এক নারীর আঙুল কাটা গেছে। তিনি বলেন, অতি-বামপন্থিরা এই সহিংসতার পিছনে ছিলো। তারা সরকারকে ফেলতে চাইছে। পুলিশকে মারতে চাইছে। নৈরাজ্যবাদীরা এই বিক্ষোভকে নিয়ন্ত্রণ করছে। এই নিয়ে ৯ দফায় বিক্ষোভ করেছেন বিক্ষোভকারীরা। জানুয়ারি মাস থেকে তারা সপ্তাহান্তে বিক্ষোভ করছেন। ইউনিয়নের নেতা মার্টিনেজ জানিয়েছেন, প্রেসিডেন্ট মাক্রোঁর সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে লাখ লাখ মানুষ রাস্তায় নামছে। ধর্মঘটের ফলে বিভিন্ন জায়গায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বিঘ্নিত হয়। শিক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, পাঁচজনের মধ্যে একজন শিক্ষক কাজে যোগ দেননি। বিক্ষোভকারীরা রেল স্টেশন ও বিমানবন্দরে যাওয়ার রাস্তা বন্ধ করে দেয়। ইউরোপের অনেক দেশেই অবসরের বয়স ৬৫। ওই দেশগুলি আবার অবসরের বয়স আরো বাড়াতে চাইছে। ফ্রান্স এখন অবসরের বয়স ৬২ থেকে ৬৪ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তার বিরুদ্ধেই প্রতিবাদে রাস্তায় নেমেছে কর্মীরা।
আকাশজমিন/আরজে