আকাশজমিন ডেস্ক
আফগানিস্তানে পাশ্চাত্যের যুদ্ধ-অপরাধের তদন্ত বা বিচার না করায় আইসিসি বা আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ল্যাভরভ। তিনি বলেছেন, ওই বিচারের হাত থেকে রক্ষা পেতে মার্কিন সরকার ও পাশ্চাত্য আইসিসি’র ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। ল্যাভরভ বলেছেন, আইসিসি যখন আফগানিস্তানে পাশ্চাত্যের যুদ্ধ-অপরাধের তদন্ত শুরু করে তখনই পাশ্চাত্য এই আদালতের কর্মকর্তাদের ওপর নানা নিষেধাজ্ঞা চাপিয়ে দেয়। আর ওইসব নিষেধাজ্ঞার কারণে আইসিসি’র উন্নয়নশীল দেশ বিষয়ক প্রতিনিধি আফগানিস্তানে পশ্চিমাদের তথা মার্কিন ও ন্যাটো সেনাদের যুদ্ধ অপরাধ তদন্তের ওই কার্যক্রম বন্ধ করে দেন। অথচ আফগানিস্তানে পশ্চিমাদের যুদ্ধ-অপরাধের সাক্ষ্য প্রমাণের সংখ্যা ছিল বিপুল।
এ বিষয়ে সাফাই দিতে গিয়ে আইসিসি’র প্রধান ব্রিটিশ নাগরিক কারিম খান ২০২১ সালে বলেছিলেন, মার্কিন সেনারা আফগানিস্তানে ব্যাপকতা ও নৃশংসতার দিক থেকে জঘন্যতম বা নৃশংসতম অপরাধযজ্ঞে জড়িত হয়নি বলে সাক্ষ্য প্রমাণে দেখা গেছে!
হেগের আন্তর্জাতিক আদালত ২০০৬ সালে আফগানিস্তানে পশ্চিমাদের যুদ্ধ-অপরাধের তদন্ত শুরু করে। ওই আদালতের তৎকালীন প্রধান ফাতো বেনসোদা ২০১৭ সালে এ বিষয়ে তদন্তের পরিপূর্ণ রিপোর্ট প্রকাশ করতে বলেন বিচারক-প্যানেলকে। কিন্তু এ অবস্থায় মার্কিন সরকার ফাতোসহ আইসিসির আরও কয়েকজন কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের হুমকি দেয়। ফলে ওই কর্মকর্তারা পিছু হটতে বাধ্য হন এবং এরফলে মার্কিন সেনাদের যুদ্ধ অপরাধের তদন্ত ও বিচারের কাজ বন্ধ হয়ে যায়।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচসহ কোনো কোনো মানবাধিকার সংস্থা এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানায়। এইচ আর ডাবলিও মনে করে হোয়াইট হাউজের নিষেধাজ্ঞার হুমকির কারণেই আফগানিস্তানে যুদ্ধ অপরাধে জড়িত মার্কিন সেনাদের বিচারের কাজ বন্ধ হয়ে গেছে।
অথচ আইসিসি পুরোপুরি রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে ও মার্কিন সরকারের সঙ্গে যোগসাজশ করে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে ইউক্রেনে যুদ্ধ-অপরাধে জড়িত বলে ঘোষণা দিয়ে গত ১৭ মার্চ তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে। পুতিনের কথিত নির্দেশে অধিকৃত অঞ্চলের ইউক্রেনের শিশুদের রাশিয়ায় নিয়ে যাওয়ার দায়ে তাকে যুদ্ধ অপরাধী বলে ঘোষণা করেছে আইসিসি।
ল্যাভরভ এ প্রসঙ্গে বলেছেন, আইসিসি’র প্রধান (কারিম খান) এখন একজন অনুগত অ্যাংলোসেক্সন! তাই বোঝা যাচ্ছে যে তিনি তার প্রভুদের হুকুম তামিল করছেন! রাশিয়া এরিমধ্যে আইসিসি’র ওই রায়ের বিরুদ্ধে এবং ওই রায়ের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবার বিরুদ্ধে বিচার-বিভাগীয় কমিটি গঠন করেছে। ওই কমিটি পুতিনের বিরুদ্ধে আইসিসি’র অভিযোগকে প্রমাণহীন এবং ওই রায়কে অবৈধ বলে ঘোষণা করেছে। রাশিয়ার জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মেদভেদেভ বলেছেন, পুতিনকে গ্রেফতারের যে কোনো চেষ্টা হবে রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধ ঘোষণার শামিল।
আকাশজমিন/আরজে