আকাশজমিন ডেস্ক
মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারের জন্য ২০১০ সালের ২৫ মার্চ গঠন করা হয় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। একই দিনে ট্রাইব্যুনালের জন্য নিজস্ব প্রসিকিউশন টিম ও তদন্ত সংস্থাকে যুক্ত করা হয়। তিন বিচারপতির নেতৃত্বাধীন ট্রাইব্যুনাল-১ এ চলতে থাকে অপরাধীদের বিচারকার্য। এদিকে বিচার নিষ্পত্তিতে গতি আনতে ২০১২ সালের ২২ মার্চ গঠন করা হয় ট্রাইব্যুনাল-২। কিন্তু ২০১৫ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর তা আবার নিস্ক্রিয় করে ট্রাইব্যুনাল-১ পুনর্গঠিত হয়। এরপর থেকেই ট্রাইব্যুনালের বিচার প্রক্রিয়ায় নেমে আসে ধীরগতি। একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারের জন্য প্রায় ৩৮ বছর পর গঠন করা হয় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। মাঝে দুটি ট্রাইব্যুনালে বিচারকার্য চালানো হলেও বর্তমানে চলছে একটিতেই। ফলে বিচারক ও প্রসিকিউটরদের নিরলস পরিশ্রমের পরও মামলাগুলো নিষ্পত্তিতে এসেছে ধীরগতি। এ অবস্থা কাটিয়ে উঠতে আরও ট্রাইব্যুনাল গঠনের প্রয়োজন দেখছেন সংশ্লিষ্টরা।
ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থায় জমে থাকা অভিযোগ ও ট্রাইব্যুনালের মামলা নিষ্পত্তিতে ধীরগতির বিষয়টি স্বীকার করে তদন্ত সংস্থার প্রধান সমন্বয়ক এম. সানাউল বলেন, তদন্ত সংস্থায় এখনও অনেক অভিযোগ পড়ে আছে। ট্রাইব্যুনালেও প্রায় ৩৫টি মামলার বিচার চলমান রয়েছে। এ মূহূর্তে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের আদালত সংখ্যা বাড়ানো জরুরি হয়ে উঠেছে।
ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশন অফিস থেকে পাওয়া তথ্যমতে, ২০১৩ সালের ২০ জানুয়ারি থেকে চলতি বছরের ২৩ মার্চ পর্যন্ত ট্রাইব্যুনালে মোট ৫১টি মামলার রায় ঘোষণা করা হয়। এসব মামলায় মোট আসামির সংখ্যা ১৫১ জন। এদের মধ্যে ১৩১ জন দণ্ডপ্রাপ্ত হয়েছেন। রায় হওয়ার আগেই কেন্দ্রীয় কারাগারে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান ১৮ জন, আর পলাতক অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন দুই জন, অপরাধ প্রমাণিত না হওয়ায় খালাস পান একজন এবং একজন আসামি অপরাধ সংঘটনের সময় শিশু বয়স থাকায় তাকে খালাস প্রদান করা হয়। এছাড়াও ট্রাইব্যুনালটিতে বর্তমানে চলমান মামলার সংখ্যা ৩৫টি। ঝুলে থাকা কিংবা তদন্তাধীন মামলাগুলো নিষ্পত্তির জন্য আরও লজিস্টিক সাপোর্ট এবং পৃথক আরেকটি ট্রাইব্যুনাল গঠনের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে বলে জানান প্রসিকিউটর (প্রশাসন) মোখলেছুর রহমান বাদল।
আকাশজমিন / আরজে