আকাশজমিন ডেস্ক
যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক ইরানের সম্পদ জব্দ করা ভুল ছিল বলে রায় দিয়েছে ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিস (আইসিজে)। বৃহস্পতিবার বিশ্ব আদালত হিসেবে পরিচিত আইসিজের রায়ে বলা হয়েছে, ইরানি কোম্পানির সম্পদ জব্দ করতে আদালতকে যুক্তরাষ্ট্রের অনুমোদন দেওয়া ছিল অবৈধ এবং ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। ক্ষতিপূরণের পরিমাণ পরে নির্ধারণ করা হবে। এই রায়টি ইরানের আংশিক জয় বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ বিশ্ব আদালত বলেছে, ইরানের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের জব্দকৃত ১.৭৫ বিলিয়ন ডলারের ক্ষেত্রে তাদের বিচারের এখতিয়ার নেই। যুক্তরাষ্ট্রের জব্দ করা সম্পদের মধ্যে ইরানের ফেরত চাওয়া এটিই ছিল সবচেয়ে বৃহত্তম। গত সপ্তাহে ইরান সমর্থিত যোদ্ধা ও মার্কিন সেনাদের পাল্টাপাল্টি হামলার মধ্যে সৃষ্ট উত্তেজনাকর পরিস্থিতিতে এই রায় দিলো আইসিজে। ২০১৫ সালে স্বাক্ষরিত পারমাণবিক চুক্তি পুনরুজ্জীবনের আলোচনা থমকে পড়া এবং ইউক্রেনে চলমান যুদ্ধে রাশিয়া ইরানি ড্রোন ব্যবহারের অভিযোগে দুই দেশের সম্পর্কের আরও অবনতি হয়। আইসিজেতে ইরানের অভিযোগ করেছিল, ১৯৫৫ সালের একটি বন্ধুত্ব চুক্তির বরখেলাপ করে ২০১৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রের আদালত অবৈধভাবে ইরানের কয়েকটি কোম্পানির সম্পদ জব্দ করেছে। সন্ত্রাসী হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে এই জব্দকৃত অর্থ দেওয়া হয়। গত বছর অনুষ্ঠিত শুনানিতে যুক্তরাষ্ট্র যুক্তি তুলে ধরে বলেছিল, মামলাটি খারিজ করা উচিত এবং সন্ত্রাসবাদে ইরানের পৃষ্ঠপোষকতার জন্য ওই সম্পদ জব্দ করা হয়েছে। আদালত এই যুক্তি আমলে নেয়নি এবং ১৯৫৫ সালের চুক্তিটি বৈধ বলে উল্লেখ করে। আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদে পৃষ্ঠপোষকতার অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে ইরান। ১৯৫০ দশকের বন্ধুত্বের চুক্তিটি ১৯৭৯ সালের ইসলামি বিপ্লবের অনেক আগে স্বাক্ষর হয়েছিল। ইসলামি বিপ্লবে মার্কিন সমর্থিত শাহ ক্ষমতা থেকে উৎখাত হন। পরে ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কে ছেদ পড়ে। ২০১৮ সালে এই চুক্তি থেকে সরে যায় ওয়াশিংটন। তবে আইসিজে রায়ে বলেছে, ইরানি বাণিজ্যিক কোম্পানি ও প্রতিষ্ঠানের সম্পদ জব্দ করার মাধ্যমে ওয়াশিংটন চুক্তি লঙ্ঘন করেছে। যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক ইরানের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ১.৭৫ বিলিয়ন ডলার জব্দ করার বিষয়ে আদালতের বিচারের এখতিয়ার নেই প্রসঙ্গে বিচারক ব্যাখ্যা দিয়ে বলেছেন, ব্যাংকটি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান নয়, তাই এই চুক্তির আওতায় সুরক্ষা প্রযোজ্য নয়। জাতিসংঘের শীর্ষ আদালতের রায় বাধ্যবাধকতাপূর্ণ, কিন্তু এগুলো কার্যকর হয় খুব কম। অতীতে বিশ্বের যে কয়টি দেশ আদালতের রায় অগ্রাহ্য করেছে সেগুলোর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ও ইরান রয়েছে।
।আকাশজমিন/ আরজে