শুক্রবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:০৭ পূর্বাহ্ন

জামিনের পর হত্যা মামলার আসামিকে বাড়ি পৌঁছে দিলো পুলিশ!

আকাশজমিন রিপোর্ট:
  • সর্বশেষ আপডেট : রবিবার, ২ এপ্রিল, ২০২৩ ২:৪৪ am

পাবনা সংবাদদাতা:  পাবনায় আওয়ামীলীগ নেতা শামীম হোসেন হত্যা মামলার অন্যতম আসামী ইমরান হোসেনের জামিনের পর তাকে পুলিশী পাহাড়ায় বাড়িতে পৌঁছে দিয়ে ওই বাড়িতে পুলিশের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

বুধবার (২৯ মার্চ) দুপুরে পাবনা প্রেসক্লাবের ভিআইপি মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে এ অভিযোগ করেন নিহত শামীমের স্ত্রী রিক্তা আরা খাতুন।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, আমার স্বামী শামীম হোসেনকে যে অস্ত্র দিয়ে হত্যা করা হয়েছে। র‌্যাব সেই অস্ত্র উদ্ধার করলেও তা চার্জশীটভ‚ক্ত করেনি পুলিশ। আসামীদের মামলা থেকে বাঁচানোর জন্য মামলাটি পুলিশ দূর্বল করে দিয়েছে। হত্যা মামলার আসামী ইমরান হোসেন জামিনে ছাড়া পাওয়ার পর কি করে পুলিশ তাকে পাহাড়া দিয়ে বাড়ি নিয়ে যায়। কিভাবে তাদের নিরাপত্তার কথা ভেবে ওই বাড়িতে পুলিশী পাহাড়া বসিয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে নিহত শামীমের স্ত্রী রিক্তা আরা অভিযোগ করেন, মামলার বাদিকে হত্যাকারীরা মামলা তুলে নিতে হুমকি দিচ্ছে। স্বাক্ষীদের স্বাক্ষ্য না দেয়ার জন্য শাসাচ্ছে। আমার স্বামী হত্যা মামলার দুই নম্বর আসামী হেমায়েতপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান তরিকুল ইসলাম নিলুর শ্যালক পুলিশের উচ্চপদস্থ জনৈক কর্মকর্তা হত্যাকারীদের বাঁচাতে এই মামলায় কলকাঠি নাড়াচ্ছেন। তার ইশারায় পুলিশ এই মামলা নিয়ে ছিনিমিনি খেলছেন।

স্বামী হত্যা মামলায় দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিসহ চারটি দাবি তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন গৃহবধূ রিক্তা আরা খাতুন।

প্রসঙ্গত, ২০২১ সালের ২৬ ডিসেম্বর চতুর্থ দফা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনের দুদিন পর ২৮ ডিসেম্বর পাবনা সদর উপজেলার হিমাইতপুর ইউপির নির্বাচনোত্তর সহিংসতায় নাজিরপুর হাটপাড়া প্রাইমারী স্কুলের সামনে প্রকাশ্য দিবালোকে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান প্রয়াত তরিকুল ইসলাম নিলু ও তার ছেলে ইমরান হোসেনসহ তাদের অনুসারীরা শামীমের উপর হামলা চালিয়ে গুলি করে হত্যা করে।

এ ঘটনায় নিহত শামীমের বাবা নুর আলী প্রামানিক বাদী হয়ে ১৬ জন নামীয় আসামীসহ অজ্ঞাত ৮/১০ জনকে আসামী করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় দুই নং আসামী তরিকুল ইসলাম গ্রেপ্তার হন। জামিনে মুক্তি পাওয়ার কয়েকদিনের মাথায় তিনি মারা যান। পরে প্রধান আসামী ইমরান হোসেন পুলিশের কাছে আত্মসমর্পন করেন।

মামলার বাদি ও তার স্বজনদের অভিযোগ, গত ২৩ মার্চ ইমরান পাবনার আদালত থেকে জামিনে মুক্তি পাবার পর তাকে পুলিশী পাহাড়া বাড়িতে পৌঁছে দেয়া হয়। পরে তার বাড়িতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারে পুলিশ মোতায়েন করা হয়।

এ বিষয়ে পাবনার পুলিশ সুপার আকবর আলী মুনসী বলেন, যেহেতু এটি চাঞ্চল্যকর হত্যাকান্ড। তাই আসামী জামিনে বের হয়ে তার বাড়িতে ফেরার পর একটা সমস্যা তৈরী হতে পারে-এমন তথ্য ছিল আমাদের কাছে। সে কারণে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ঠিক রাখতে ওই এলাকায় একটি পুলিশের টহল টিম মোতায়েন করা হয়েছিল। যাতে মামলার বাদি-বিবাদির মধ্যে কোনো ঘটনা না ঘটে। এখানে আসামীকে বাড়িতে তুলে দেয়া বা শুধু আসামীর বাড়িতে নিরাপত্তা দেয়ার অভিযোগ ঠিক নয়। পুলিশের অবস্থানকে ভুল ব্যাখ্যা করা হয়েছে। নিরাপত্তার স্বার্থে পুলিশ মোতায়েন ছিল, অন্যকোনো কারণে নয়।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, নিহতের বাবা নুর আলী প্রামানিক, চাচা আবু দাউদ রনি, চাচাতো ভাই রাশেদ হাসান মিঠুন, আত্মীয় পাভেল হাসান জাহাঙ্গীর প্রমুখ।

 

আকাশজমিন/এসআর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো পড়ুন
আর্কাইভ
© All rights reserved © Akashjomin

Developer Design Host BD