আকাশজমিন ডেস্কঃ
পূর্বাঞ্চলীয় বাখমুত শহর থেকে ইউক্রেনীয় সেনাদের পিছু হটার সম্ভাবনার কথা স্বীকার করেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। বুধবার তিনি বলেছেন, মিত্র দেশের কাছ গোলাবারুদ সরবরাহ করা হলে ইউক্রেনীয় প্রতিরক্ষা জোরদার হবে। মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন এ খবর জানিয়েছে। বুধবার পোল্যান্ড সফরে ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেন, আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ হলো আমাদের সেনাবাহিনীর ক্ষতি না করা। নিশ্চিতভাবে যদি পরিস্থিতি আরও তীব্র হয় এবং ঘেরাওয়ের ফলে আমাদের আরও সেনা হারানোর ঝুঁকি দেখা দেয় তাহলে রণক্ষেত্রের সেনাপতির উপযুক্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া সঠিক হবে। আমি এই বিষয়ে নিশ্চিত।
পোলিশ প্রেসিডেন্ট আন্দ্রেজ দুদাকে পাশে নিয়ে জেলেনস্কি বলেন, কিন্তু ইউক্রেনে আরও উপযুক্ত গোলাবারুদ যত দ্রুত পৌঁছাবে আমরা শুধু বাখমুত নয়, পুরো দেশের ভূখণ্ডের জন্য দ্রুততার সঙ্গে লড়াই করতে পারব। জেলেনস্কি বলেছেন, ইউক্রেনের মধ্যে বাখমুতের পরিস্থিতি সবচেয়ে কঠিন। শহরটি কয়েক মাস ধরে রুশ সেনাদের হামলার প্রধান লক্ষ্যবস্তু। তিনি বলেন, বাখমুতে বিপুল সংখ্যায় অস্ত্র ও কামান ব্যবহার করা হচ্ছে। পরিস্থিতি খুব কঠিন। প্রতিদিন ঘাটতি তৈরি হচ্ছে। আমাদের কামান রয়েছে, গোলাবারুদ কখনও পর্যাপ্ত থাকছে, কখনও কম। এমনটি প্রতিদিন ঘটছে। বাখমুতে কিছু অঞ্চলে আমরা সাফল্য পেয়েছি, সামনে এগিয়েছি অথবা আমরা সাফল্য পাইনি এবং আবারও নিজেদের অবস্থান থেকে পিছু হটেছি। তিনি আরও বলেন, তবে এখন পর্যন্ত বাখমুত শত্রুরা নিয়ন্ত্রণে নিতে পারেনি। এই হলো আজকের পরিস্থিতি। রাশিয়ার ভাড়টে বাহিনী ওয়াগনার গ্রুপ রবিবার ইউক্রেনের বাখমুত শহর নিয়ন্ত্রণের দাবি করেছে। তবে এই দাবি প্রত্যাখ্যান করে লড়াই চলছে বলে দাবি করেছে ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনী ও যুক্তরাষ্ট্র। হোয়াইট হাউজ দাবি করেছে, বাখমুতের যুদ্ধ শেষ হয়ে যায়নি, শহরটি ধরে রাখতে কঠোরভাবে লড়ছে ইউক্রেন। যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের মুখপাত্র জন কিরবি সোমবার (৪ এপ্রিল) সাংবাদিকদের বলেন, ইউক্রেনীয়দের শহর থেকে সরিয়ে দেওয়া যায়নি। আগের দিন ওয়াগনার প্রধান ইয়েভজেনি প্রিগোজিন দাবি করেন, দীর্ঘ লড়াইয়ের মধ্যে দিয়ে বাখমুত আইনগতভাবে নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে তার বাহিনী। সিটি হলের রুশ পতাকা উত্তোলনের একটি ভিডিও প্রকাশ করেন তিনি।
এরপরই ইউক্রেনের পূর্ব সামরিক কমান্ডের মুখপাত্র সেরহি চেরেভাতি ফোনে বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, বাখমুতে ইউক্রেনীয়দের, রুশ বাহিনী কিছুই দখল করতে পারনি। লক্ষ্য থেকে তারা অনেক দূরে।
৭ মাসের বেশি সময় বাখমুতে রুশ ও কিয়েভের সেনাদের মধ্যে লড়াই চলছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকাভাবে কোনও পক্ষই শহরটি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণের ঘোষণা দিতে পারেনি। ২০২২ সালে ফেব্রুয়ারিতে যুদ্ধ শুরুর পর এখানকার প্রায় ৭০ হাজার মানুষ অন্য জায়গায় পালিয়ে গেছে।
আকাশজমিন/আরজে