আকাশজমিন ডেস্কঃ আনন্দঘন ঈদ যাত্রায় প্রতিবছরই বাড়তি চাপ রেলপথে। টিকিট ও আসন না পেলেও ছাদে উঠে অনেকে রওনা হন গন্তব্যে। এবার যাত্রীদের ভোগান্তি কমাতে ঈদ যাত্রায় অতিরিক্ত রেলকোচ প্রস্তুত করছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। তা ঘিরেই ব্যস্ততা এখন নীলফামারীর সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানায়। নানান সংকটের মধ্যেও এবারের ঈদযাত্রায় ১০০টি কোচ সংযুক্ত করতে যাচ্ছে কারখানাটি। এর মধ্যে ৮৩টি ব্রডগেজ, ১৭টি মিটার গেজ কোচ।
দম ফেলা ফুসরত নেই কাজ চলছে বিরতিহীনভাবে। প্রতিদিন সকাল ৭টা থেকে শুরু করে বিকেল ৪টা পর্যন্ত কাজ চলছে কারখানার ২৪টি বিভাগে। এরই মধ্যে প্রস্তুত হওয়া ৯০টি বগি চলে গেছে রেলওয়ের পাকশী ও লালমনিরহাট রেলওয়ে বিভাগের কাছে। মেরামত করা এসব কোচ ঈদের বিশেষ ট্রেনগুলোতে সংযুক্ত করা হবে। এতে ঈদে ঘরমুখো মানুষের যাত্রাপথের ভোগান্তি কিছুটা হলেও লাঘব হবে বলে ধারণা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
জানা গেছে, সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানায় পুরোনো ট্রেনকে নতুন করার কাজ চলে আসছে ব্রিটিশ আমল থেকে। ব্রিটিশ সরকার ১৮৭০ সালে সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানাটি স্থাপন করে। কারখানার যান্ত্রিক শাখায় ২ হাজার ৮৫৯ জনবলের বিপরীতে রয়েছেন মাত্র ৬২১ জন।
সরেজমিনে সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার ক্যারেজ শপ, সিএইচআর শপ, জিওএইচ ও উৎপাদন মেশিন শপ ঘুরে দেখা যায়, দম ফেলার সময় নেই শ্রমিকদের। পুরনো ও ড্যামেজ কোচগুলো মেরামত করে করা হচ্ছে নতুন চকচকে। কেউ ব্যস্ত ক্ষুদ্র যন্ত্রাংশ মেরামতে কেউ বা ব্যস্ত চাকা মেরামতে। ওয়েল্ডিং ও কোচের সিট মেরামত করে বগিগুলোতে লাগানো হচ্ছে ফ্যান। পর্যাপ্ত জনবল ও কাঁচামালের অভাবে কর্মযজ্ঞ কিছুটা বাধাগ্রস্ত হলেও মানুষ যেন ঈদে স্বস্তিতে বাড়ি ফিরতে পারে সেই তাগিদে হাসিমুখেই কাজ করছেন শ্রমিকরা।
ওয়েল্ডিং মিস্ত্রি ছোবাহান আলী বলেন, ঈদুল ফিতর উপলক্ষে আমাদের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে গাড়ির যাবতীয় কাজ করছি। অচল গাড়িকে আমরা সচল করে থাকি। আমাদের কাজের পরিমাণ বেড়ে গেছে, আগে যে পরিমাণ আউটটার্ন যেত তার দ্বিগুণ দেওয়ার চেষ্টা করছি। কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে খুব আন্তরিক। আমাদের ওভারটাইম, হলিডেসহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা দিয়ে আউটটার্ন নেয়ার চেষ্টা করছে। আমাদের কষ্টের বিনিময়ে মানুষ শান্তিমতো ঈদ করতে পারবে, ঘরে ফিরতে পারবে, এটাই আমাদের সফলতা।
পেইন্ট শপের শহিদুল ইসলাম বলেন, কাজের চাপ এত বেশি যে বলার মতো না। আমাদের লোক সংকট, যার কারণে আউটটার্ন ঠিকমতো দিতে পারছি না। সীমিত লোক নিয়ে গাড়ি আউটটার্ন দিচ্ছি আমরা। বাংলাদেশের বহুলোক বহু জায়গায় নিজ নিজ গন্তব্যেস্থলে যাবে, গাড়িতে টিকেট কেটে যাবে। এটা আমাদের অনেক অনেক ভালো লাগবে। এটা আমাদের গর্ব। আমরা একটা সেবামূলক প্রতিষ্ঠানে কাজ করছি। সেবা দেওয়াটাই আমাদের কর্ম।
আকাশজমিন /এসআর