রাঙামাটি সংবাদদাতাঃ
রাঙামাটির কাপ্তাই হ্রদের আসামবস্তি খাল খনন করে মাটি ফেলা হচ্ছে খালের পাশেই। এতে খালটি পুনরায় ভরাটের শঙ্কা প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা। একইসঙ্গে খননকাজের অর্থ অপচয় হচ্ছে বলে জানালেন তারা। জানা গেছে, রাঙামাটি শহরের একটি সেতু নির্মাণ করতে হ্রদের ওপর বিকল্প সড়ক তৈরি করা হয়েছিল। এ জন্য বন্ধ হয়ে গিয়েছিল কাপ্তাই হ্রদের সংযোগ খাল আসামবস্তি নৌপথের যোগাযোগ। নৌ-যোগাযোগ পুনরায় চালু করতে খাল খননের উদ্যোগ নেয় পানি উন্নয়ন বোর্ড। কিন্তু খননকাজ শুরু হলেও মাটি রাখা হচ্ছে খালের পাশেই। তবে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা বলেছেন, খননকাজ শেষ হওয়ার আগেই মাটি সরিয়ে নেওয়া হবে। আপাপত খালের পাশেই মাটি রাখা হচ্ছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যমতে, খালটি ১১ মিটার প্রশস্ত ও ২.৫ মিটার গভীর করা হচ্ছে। খননকাজের ব্যয় ধরা হয়েছে ২৬ লাখ টাকা। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এক দশক আগেও তবলছড়ির সঙ্গে আসামবস্তি নৌপথে চলতো ইঞ্জিনচালিত নৌকা ও নৌযান। ২০১৬ সালে সড়ক ও জনপথ বিভাগ তবলছড়িতে হ্রদের মাটি ভরাট করে বিকল্প সড়ক তৈরি করায় নৌপথটি বন্ধ হয়ে যায়। বর্তমানে খালের ওই অংশ ময়লা-আবর্জনায় ভর্তি। অনেকে খাল দখল করে তৈরি করেছেন স্থাপনা ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। স্থানীয় এলাকাবাসী ও তবলছড়ি বাজারের ব্যবসায়ীরা দীর্ঘদিন ধরে খালটি খনন করে পুনরায় নৌপথ সচলের দাবি জানিয়ে আসছিলেন। তাদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে গত ৫ এপ্রিল থেকে খননকাজ শুরু হয়। কাজ শুরুর পর মাটি কেটে রাখা হচ্ছে খালের পাশেই। এতে পুনরায় ভরাট হয়ে যাওয়ার শঙ্কা তাদের। স্থানীয়দের দাবি, মাটিগুলো সরিয়ে না নিলে বর্ষা মৌসুমে খালটি ভরাট হয়ে যাবে। খালটি স্থানীয়দের কোনও উপকারে আসবে না। অপচয় হবে রাষ্ট্রীয় অর্থ। স্থানীয় ব্যবসায়ী মো. মোসলেম উদ্দিন বলেন, ‘কাজ শুরু হওয়ায় আমরা খুশি হয়েছিলাম। তবে যেভাবে কাজ হচ্ছে তাতে আবারও মাটি ভরাট হয়ে যাবে। তাই খননের পর মাটি অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার দাবি জানাই।’আরেক স্থানীয় বাসিন্দা বাবলা দাশ বলেন, ‘একসময় এই নৌপথে নৌকা চলতো। কিন্তু সেতু নির্মাণ করায় খাল শুকিয়ে নৌ-চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। দীর্ঘদিন পর খননকাজ শুরু হয়েছে। কিন্তু যেভাবে কাজ হচ্ছে, তাতে মনে হয় অর্থের অপচয় হচ্ছে। কারণ খাল খনন করে মাটি অন্যত্র সরিয়ে না নিলে খননকাজ কোনও কাজে আসবে না। একই কথা বলেছেন রাঙ্গামাটি পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পুলক দে। তিনি বলেন, ‘মাটি সরিয়ে না নিলে বর্ষা মৌসুমে আবার ভরাট হয়ে যাবে খাল। এতে খননকাজ কাজে আসবে না। আমি সংশ্লিষ্টদের কাছে অনুরোধ জানাই, খাল খনন করে মাটিগুলো অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হোক।’ এ বিষয়ে রাঙামাটি পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী তয়ন কুমার ত্রিপুরা বলেন, ‘খাল খনন শুরু হয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ শুনেছি। কাজ শেষ হওয়ার আগেই মাটি অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হবে। ফলে খাল ভরাট হবে না।’
আকাশজমিন/ আরজে