জামালপুর সংবাদদাতাঃ
জামালপুরের ইসলামপুর সাপধরী ইউনিয়নের যমুনার চরে প্রায় ২০ বছর ধরে গড়ে উঠেছে জনবসতি। চরের পাঁচটি গ্রামে প্রায় তিন হাজার পরিবারের বসবাস। যমুনার সেই দুর্গম চরে পৌঁছে গেছে বিদ্যুৎ। আলোকিত হয়েছে গ্রামগুলোর বাড়ি-ঘর, মুদি দোকান, প্রাথমিক বিদ্যালয় ও মসজিদ। পল্লী বিদ্যুৎ অফিস সূত্রে জানা যায়, ২০২২ সালের শুরুর দিকে জামালপুরের ইসলামপুরের ৪টি ইউনিয়নের ২০ হাজার মানুষকে বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় আনা হয়। সেই সময় যমুনা নদীর তলদেশ দিয়ে ২টি সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে ৮৯ কিলোমিটার এলাকায় ২ হাজার ৮৮৮টি সংযোগ প্রদান করে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি। উপজেলার সাপধরী ইউনিয়নের দুর্গম চরের পূর্ব মন্ডলপাড়া এলাকাযর মো. হাসু মন্ডল বলেন, ‘আমরা আগে কোনোদিন চিন্তাও করি নাই যে এখানে বিদ্যুৎ আসবে। এখানে বিদ্যুৎ আসার পর আমি সংযোগ নেই। আমার ৪ ঘরে ৪টি করে ফ্যান ও বাতি জ্বলে। বিলও অনেক কম আসে। এছাড়া এখন আর আগের মতো লোডশেডিং হয় না। দিনে দুই একবার সর্বোচ্চ এক ঘণ্টা লোডশেডিং হয়।’একই গ্রামের হাফিজুর রহমান বলেন, আগে একটা মোবাইল কিনতে চাইলেও চার্জ দেওয়া নিয়ে বারবার চিন্তা করতাম। এখন আমাদের সবার হাতে হাতে স্মার্টফোন। এটাই হচ্ছে পরিবর্তন। এই দুর্গম চরে বিদ্যুতের কারণে আমাদের স্বাভাবিক জীবনে অনেক পরিবর্তন এসেছে। আমরা ধীরে ধীরে উন্নত হচ্ছি। একই ইউনিয়নের পশ্চিম মন্ডলপাড়া বাজারের মুদি দোকানদার আব্দুল মোতালেব বলেন, বিদ্যুৎ আসার আগে আমি দিনে ৪-৫ হাজার টাকা বিক্রি করতাম। এখন বিদ্যুৎ আসার পর আমি ফ্রিজ কিনেছি। এছাড়া কিছু বাড়তি জিনিস বিক্রি করা শুরু করেছি। এখন আমি দিনে ৭-৮ হাজার টাকা বিক্রি করি। একই গ্রামের কৃষক আজিজুর রহমান বলেন, আগে আমাদের গ্রামের সবাই তেল দিয়ে সেচ পাম্প চালাতো। এতে খরচ বেশি হতো। এখন সবাই বিদ্যুতের পাম্প চালাই। তেলের দাম এখন বেশি। এই এলাকায় বিদ্যুৎ না থাকলে আমরা বিপদে পড়ে যেতাম। পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ইসলামপুর জোনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার মো. আলীবর্দী খান সুজন বলেন, পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি সবসময় গ্রাহকদের সেবায় কাজ করে থাকে। তবে ইসলামপুরে কিছু লোক আছে যাদের কারণে গ্রাহকদের অনেক অর্থ অপচয় হয় এবং গ্রাহকরা অনেক ভোগান্তির মধ্যে পড়ে। গ্রাহকদের কাছে শুধুমাত্র একটি অনুরোধ থাকবে, যেকোনো প্রয়োজনে তারা যেন সরাসরি পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে যোগাযোগ করে।
আকাশজমিন/ আরজে