লালমনিরহাট প্রতিনিধি:
নিত্যপণ্যের বাজারে আগুন নিভছেই না। লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে প্রায় প্রতিটি নিত্যপণ্যের দাম। একই অবস্থা সবজির বাজারেও। এতে চাপে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। সরবরাহে খুব একোংপলখৈৈটা ঘাটতি না থাকলেও বেশির ভাগ পণ্যের দাম ঊর্ধ্বমুখী। লালমনিরহাট কালীগঞ্জ বাজারগুলোতে এক কেজি পাকা টমেটোর দাম ২৩০টাকায় উঠেছে। অন্যান্য সবজির মধ্যে বেশির ভাগের কেজি এখন ৮০ টাকা ছুঁয়েছে।
শনিবার (১২অক্টোবর) কালীগঞ্জ উপজেলার তুষভান্ডার বাজার,কাকিনা চাপরহাট সহ বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, মান ও বাজারভেদে এক কেজি পাকা টমেটো বিক্রি হচ্ছে ২২০থেকে ২৩০টাকা। শিম বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২১০ টাকা কেজি। বেগুন জাত ভেদে ৭০-১০০ টাকা চাইছেন বিক্রেতারা।খুচরা বিক্রেতারা এক কেজি বরবটি বিক্রি করছেন ৮০ থেকে ৯০টাকা। গাজরের কেজি ২০০থেকে ২২০ টাকা। এক কেজি করলা কিনতে ক্রেতাদের ৮০থেকে ৯০ টাকা গুনতে হচ্ছে। কেজি ৭০ টাকা ছুঁয়েছে পটোল, ঝিঙা, কচুরলতি, কাঁকরোল। বিক্রেতারা এক কেজি পটোল ৬০ থেকে ৭০ টাকায় বিক্রি করছেন। কচুরলতির কেজি ৩০ থেকে ৪০ টাকা। কাঁকরোল বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকায়। বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকায়। ছোট একটা ফুলকপি বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১২০ টাকায়। একই দামে বিক্রি হচ্ছে বাঁধাকপি। কচুরমুখী বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকা কেজি। মিষ্টি কুমড়ার কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকা। চিচিঙ্গা বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকা কেজি।বাজারে এখন সবচেয়ে কম দামে পাওয়া যাচ্ছে কাঁচা পেঁপে ও কাঁচকলা। এক কেজি পেঁপে বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকা। কাঁচকলার হালি ৩০ থেকে ৪০ টাকা। কাঁচামরিচ বিক্রি ৩২০ থেকে ৩৩০ টাকায়। ভালো মানের শসা কিনতে ক্রেতাদের ৭০ থেকে ৮০ টাকা গুনতে হচ্ছে।
দেশি পেঁয়াজ ১০৫-১১৫ টাকা, আমদানি করা পেঁয়াজ ৯৫-১০৫ টাকা, দেশি রসুন ২১০-২২০ টাকা, আমদানি করা রসুন (মানভেদে) ২০০-২২০ টাকা, দেশি আদা ২৪০-২৬০ টাকা, আমদানি করা আদা ২৮০-৩০০ টাকা, শুকনো দেশি লাল মরিচ ২৫০ টাকা, আমদানি করা শুকনো মরিচ ৪০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
খুচরা বাজারের বিক্রেতারা বলছেন, টানা বৃষ্টির কারণেই সবজির দাম হঠাৎ বেড়েছে। তবে বৃষ্টি কমলে বাজারে সবজি সরবরাহ বাড়বে তখন দাম আবার হাতের নাগালে চলে আসবে। আবার অনেকেই বলছেন, উত্তরবঙ্গে লালমনিরহাটে বন্যার কারণে সবজির বাজারে বাড়তি চাপ পড়েছে।এক বিক্রেতা বলেন, কাঁচা মরিচের দাম কেজিতে নেমে এসেছে। দুদিন আগেও এর দাম ছিল ৩৬০ টাকা। তবে অন্যান্য সবজির দাম চড়া। উত্তরবঙ্গে বৃষ্টি ও বন্যার কারণে এমন পরিস্থিতি হয়েছে।
আরেক জন বিক্রেতা শহিদুল ইসলাম বলেন, সব সবজির দামই চড়া। তাই কাস্টমার বেশি সবজি নেয় না। অনেক ক্রেতাই এখন আধা কেজি (৫০০ গ্রাম) সবজি বেশি নিচ্ছেন।
এ সময় একজন ক্রেতা সুজন মিয়া বলেন, দুই-তিনটা সবজি কিনলেই ৫০০ টাকা শেষ হয়ে যাচ্ছে। তাহলে অন্যান্য বাজার কীভাবে করবো। এ বিষয়গুলো সরকারের পক্ষ থেকে সরাসরি তদারকি করা প্রয়োজন। বন্যা-বৃষ্টি হলে যেন সবজি বা নিত্য প্রয়োজনীয় বাজার ক্রেতার নাগালের বাইরে চলে না যায় এ বিষয়ে আগে থেকেই প্রস্তুতি নিয়ে রাখতে হবে।
সবজির এমন দাম নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করে একজন ক্রেতা বলেন, বাজারে এখন কোনো সবজিতে তো হাত দেওয়ার মতো অবস্থা নেই। সব ধরনের সবজির দামে আগুন। পকেটে ৫০০ টাকা নিয়ে এলে তেমন কোনো বাজার করাই হয় না। সবজির এত দাম কিছুতেই স্বাভাবিক হতে পারে না। বাজারে জিনিসপত্রের দাম কমাতে সংশ্লিষ্টদের দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।
তুষভান্ডার বাজারের একজন সবজি বিক্রেতা শাহিন বলেন, বৃষ্টির কারণে কয়েক দিন ধরে বাজারে সবজির সরবরাহ কিছুটা কম। এ কারণে সব ধরনের সবজির দাম বেড়েছে। সহসা সবজির দাম কমবে বলে মনে হচ্ছে না। কারণ বৃষ্টিতে সবজি ক্ষেতের বেশি ক্ষতি হয়েছে।
বাজারের আরেক ব্যবসায়ী সাইদুল বলেন, বৃষ্টির কারণে প্রতি বছরই এ সময় সবজির দাম বাড়ে। তবে অন্যবারের তুলনায় এবার দাম অনেক বেশি। আমরা নিজেরাও বুঝি এত বেশি দামে সবজি কেনা ক্রেতাদের জন্য খুবই কষ্টের। কিন্তু আমাদের তো কিছু করার নেই। আমরা তো কম দামে সবজি কিনতে পরছি না।
কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জহির ইমাম বলেন, বাজার মনিটরিং টিম রয়েছে। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে শীঘ্রই ভ্রাম্যমান আদালত অভিযান পরিচালনা করা হবে।
আকাশজমিন/এম