রবিবার, ০৩ নভেম্বর ২০২৪, ০১:১৫ অপরাহ্ন
নড়াইল টিটিসির ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আবুল বাশার আল মামুন সিদ্দিকীর

বিরুদ্ধে অনিয়ম ও অর্ধ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

আকাশজমিন রিপোর্ট:
  • সর্বশেষ আপডেট : শনিবার, ১২ অক্টোবর, ২০২৪ ৭:২৮ pm

 

নড়াইল প্রতিনিধি

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক টিডিসির কয়েকজন কর্মচারী অভিযোগে জানান, ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আবুল বাসার সিদ্দিকী ১৪/১২/২০২২ সালে যোগদানের পর থেকেই দুর্নীতি ও অনিয়মের মধ্যে জড়িয়ে পড়ে। টিটিসি নড়াইলে যোগদানের পরে ২০২৩ সালের মার্চে তার বিরুদ্ধে পত্রিকায় রিপোর্ট হয় এবং দুর্নীতি ও অর্থ আত্মসাৎ এর বিষয়টি প্রকাশিত হয় (বিভিন্ন পত্রিকায় ২৫ শে মার্চ ২০২৩)। ১৪/১২/২০২২ সালে যোগদানের পর থেকে অদ্যবদী তিনি অর্ধ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন মর্মে অভিযোগ উঠে আসে।

নড়াইল কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আবুল বাশার আল মামুনের বিরুদ্ধে উল্লেখ্য কিছু বিষয় হলো ২০২২/২৩ অর্থ বছরে জিওবি কোডে কাঁচামাল ও ভবন স্থাপনার জন্য বরাদ্দকৃত ২১ লক্ষ টাকার কোন প্রকার কাঁচামাল ক্রয় না করে ট্রেড ইনচার্জগণকে অফিসিয়ালি ও মাস্তান বাহিনী দ্বারা চাপ দিয়ে সম্পূর্ণ টাকা নিজে আত্মসাৎ করেন।
ইতোপূর্বে জিওবি কোডের ২০২৩/২৪ অর্থ বছরে ৩৫ লক্ষ টাকার টেন্ডার করে যতসামান্য মালামাল ক্রয় করে সিংহভাগ অর্থ অধ্যক্ষ নিজে আত্মসাৎ করছেন এবং ট্রেন্ডারের সকল দায়ভার ট্রেন্ডার কমিটিকে দিয়ে নিজে পরিচ্ছন্ন থাকার চেষ্টা করেন।
বর্তমান অ্যাসেট প্রকল্পের প্রথম ব্যচের কাঁচামাল বাবদ বরাদ্দকৃত ৪৩৭৫০০/- টাকার ৭০% টাকা তিনি নিজে পকেটস্ত করেন এবং বাকি ৩০% টাকার কাঁচামাল তিনি নিজে কি নেদেন। অধ্যক্ষের নিজ হাতে কিনে দেওয়া মালালের বেশির ভাগই ব্যবহারের অনুপযোগী।

অ্যাসেট প্রকল্পের প্রথম ব্যচের স্টেশনারী বাবদ বরাদ্দকৃত ২২৫০০০/- টাকার তেমন কোন মালামাল না কিনে টাকা আত্মসাৎ করেন। এবং প্রশিক্ষার্থীদের নামে মাত্র CBLM দেওয়া হয়েছে যার কোন ধারাবাহিকতা নাই। টাকা আত্মসাৎ এর কারনে নিজের প্রতিষ্টানের আউটসোর্সিং এর জনবল দিয়ে নিজের প্রতিষ্টানের নষ্ট ফেটোকপি মেশিন এর মাধ্যমে নামে মাত্র ফটোকপি করে স্টাবলার করে প্রশিক্ষার্থীদের দেওয়া হয়। এ ছাড়া ব্যাগ, গেঞ্জি, খাতা, কলম, সহ সেপটি ইকুইপমেন্ট দেওয়ার কথা থাকলেও তার কোয়ালিটি থাকে সব সময় সর্বনিন্মমানের যা কিনা ব্যবহারের অনুপযোগী।

অ্যাসেট প্রকল্পের প্রথম ব্যচের বরাদ্দকৃত প্রচারনার টাকা, ব্যাচ ক্লোজিং এর টাকা, কোন প্রকার কাজ না করে তিনি আত্মসাৎ করেন।

অ্যাসেট প্রকল্পের দ্বিতীয় ব্যচের ক্ষেতে একই ধারাবা হিকতা বজায় বজায় রেখেছে। আবার ও নামে মাত্র নিম্নমানের ব্যবহারিত স্টেশনারী দিয়েছেন। CBLM

ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আবুল বাসার অল মামুন সিদ্দীকি যোগদানের তিন মাসের মধ্যে হিসাব শাখা সহ অন্যান্ন শাখা থেকে সারানো হয় পূর্বের অধ্যক্ষের সাথে সফল ভাবে কাজ করা ইন্সট্রাক্টর দের, যার মূল কারণ ছিলো বর্তমান অধ্যক্ষের অবৈধ বিল ভাউচারের বিরুদ্ধে কথা বলা। এবং একই ভাবে সরানো হয় অধ্যক্ষের সাথে কাজ করা ইন্সট্রাক্টর কে যিনি অতিরিক্ত দায়িত্ব ছিলেন হিসাব শাখার। অবৈধ বিল ভাউচারের স্বপক্ষে না থাকার কারনে তাকে খাগড়াছড়িতে বদলি করিয়েছেন।

নড়াইল টিটিসির গার্মেন্টস ট্রেডের অবস্থা ভয়াবহ। কোন প্রকার মালামাল ছাড়াই চলে এই টেড। বর্তমান ইনচার্জ মোঃশমীম মিনা তিনি মূলত রেফ্রিজারেশন এন্ড এয়ারকন্ডিশন (আর এ সি) ট্রেডের ইন্সট্রাক্টর, যার ট্রেডের কোন অনুমোদন নাই নড়াইল টিটিসিতে। কিন্তু অধ্যক্ষ স্যারের সকল দুর্নীতি আর অর্থ আত্মসাৎ এর সহযোগী হিসাবে কাজ করে যাচ্ছে মোঃ শামীম মিনা,ইন্সট্রাক্টর (আর এসি) এবং মোঃ রিপন হোসেন ইন্সট্রাক্টর (ইলেকট্রিক্যাল)। এই গার্মেন্টস ট্রেডের কাঁচামাল ঠিকমতো না দেওয়ারকারনে অধ্যক্ষ মহোদয়ের সাথে বাকবিতন্ডে জড়াতে হয় পূর্বের দুই জন ইনচার্জ কে, যার ফলে তাদেরকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেন বর্তমান অধ্যক্ষ স্যার। কিন্তু বর্তমান অধ্যক্ষ স্যারের ছ ত্রছায়ায় নড়াইল টিটিসির স্থানীয় ইন্সট্রাক্টর মোঃ শামীম মিনা কোন প্রকার লেভেল সনদ না থাকা সত্তেও তিনি ট্রেড ইনচার্জ হিসাবে অদক্ষতার সাথে দায়িত্ব পালন করছেন। এমন কি অবৈধ বিলের সাথে কোন আপোষ না করার কারনে ঐ দুই জন ইনচার্জ কে কারনে অকারনে একাধিক শোকোজ করা হয়েছিল। যা মনষিক চাপ সৃষ্টি এবং বিভ্রান্তী মূলক।

ট্রেড ইনচার্জ হিসাবে মোঃ শামীম মিনা কে পূর্ণ সম্মানী দেওয়া হলেও বঞ্চিত করা হচ্ছে কম্পি উটার অপারেশন ট্রেডের ইনচার্জ
কে। অধ্যক্ষ স্যারের অবৈধ বিল ভাউচারের সাথে আপোষ না করার কারনে তাকে কোন সম্মানী দেওয়া হয়না। কিন্তু কম্পিউটার
ট্রেডের ইনচার্জ থাকা স্বত্তেও অধ্যক্ষ স্যার তার ভাইপো (ভাইয়ের ছেলে) কে অ্যাসেট প্রকল্পের অতিথি প্রশিক্ষক হিসাবে নিয়োজিতনকরেছেন।
এছাড়া তিনি কম্পিউটার অপারেটর নিয়োজিত করেছেন তার নিকট আত্মিয়কে যার কম্পিউটারের উপর বিন্দুমাত্র দক্ষতা নেই।

আবার অ্যাসেট প্রকল্পের মনিটরিং অফিসার নিয়োজিত করিছেন টিটিসি অফিসের পাশে অবস্থিত উসমান বীন আল্ফান মাদ্রাসার মুহতামিম কে, কোন প্রকার কাজ করা ছাড়াই তাকে বিরাট অংকের সম্মানী দিচ্ছেন বর্তমান অধ্যক্ষ। টিটিসিতে একাধীক ইন্সট্রাক্টর আছেন তারা কোন সম্মানী পায়না অথচো সারদিন কাজ করতে হয়। এর মূল কারন হলো তিনি এই এলাকর স্থানীয় এবং তাকে দিয়ে বিভিন্ন অপকর্ম করিয়েছেন বর্তমান, অধ্যক্ষ। যেমন সেইপ প্রকল্পের একজন অতিথি প্রশিক্ষক কে জিম্মি করান এবং কোন প্রকার মালামাল না দিয়ে সকল প্রকার মালামাল বুঝিয়া পেয়েছি মর্মে স্বাক্ষর করাতে বাধ্য করেন। পরবর্তীতে নড়াইলের স্থানীয় সাংবাদিক এসে তাকে উদ্ধার করেন। এসব অনীয়মের কথা বলতে গেলে তিনি উচ্চবাচ্চ করেন এবং ট্রান্সফারের হুমকি দেখান।

কথায় কথায় রাঙ্গামাটি খাগড়াছড়িতে বদলির হমকি দেখান। ইতিমধ্যে তিনি আমাদের একজন প্রশিক্ষককে খাগড়াছড়িতে বদলি করিয়েছেন। যার কারনে আমরা সাধারণ প্রশিক্ষক ভয়ের মধ্যে থাকতে হয়।

অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) আবুল বাসার অল মামুন সিদ্দীকি যোগদানের দুই মাসের মধ্যে পিডিও ইনচার্জ থেকে সারানো হয় অতিরিক্ত দায়িত্ব থাকা ইন্সট্রাক্টর কে, যার মূল কারণ ছিলো অবৈধ ইনকামের সহযোগীতা না করা। এমনকি এই প্রশিক্ষক কে বাধ্য করা হয় বদলি নিতে।

কর্মচারী জয়দেব বৈধ্য অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) আবুল বাসার অল মামুন সিদ্দীকি স্যারের বিভিন্ন এজেন্সি ও দালালের মাধ্যমে টাকা ইনকামের সহেযোগীতা না কারায় রাত্রে ডিউটিরত অবস্থায় তার কাছে অফিসের ফোন এবং তার নিজের ফোন চুরির নাটক দেখিয়ে তাকে চাকরি চুত্ত করেন। কিন্তু ডিউটিরত অবস্থায় জয়দেব বৈধ্য সিসিটিভি ফুটেজের মধ্যে থাকা সত্তেও কোখনো তা দেখাতে রাজি হননি। তার প্রমাণ হিসাবে সকলে বুঝতে পারে যে কর্মচারী জয়দেব বৈধ্যের মোবাইল এবং অফিসের মোবাইল চুরির ঘটনার সাথে অধ্যক্ষ নিজে জড়িত ছিলেন।

অধ্যক্ষের এমন অনিয়ম ও দুর্নীতির কারনে নড়াইল টিটিসির প্রশিক্ষণ মান উন্নয়নে ব্যাহত হচ্ছে এবং একইসাথে প্রতিষ্টানের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে বলে মনে করে নড়াইল টিটিসির কর্মকর্তা/কর্মচারিবৃন্দ।
এমতাবস্থায় প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের, জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো এর অধিনে পরিচালিত কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র নড়াইলের প্রশিক্ষণের মান উন্নয়ন ও ভাবমূর্তি রক্ষার জন্য বর্তমান অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) আবুল বাসার আল মামুন সিদ্দীকি কে নড়াইল টিটিসির উপাধ্যক্ষ পদে বহাল রেখে অধ্যক্ষ হিসাবে ফুল প্লেজের অধ্যক্ষকে দায়িত্ব দিয়ে প্রতিষ্টানের সার্বিক উন্নয়ন করা সম্ভব বলে মনে করে।

এসব অভিযোগ অস্বীকার করে অধ্যক্ষ আবুল বাশার আল মামুন সিদ্দিকী বলেন,আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। দুর্নীতির নিউজ পত্রিকার হওয়ার বিষয় জানতে চাইলে বলেন সাংবাদিকরা উদ্দেশ্য প্রণদীতভাবে ভুল নিউজ করেছিল।

আকাশজমিন/এম

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো পড়ুন
আর্কাইভ
© All rights reserved © Akashjomin

Developer Design Host BD