আকাশজমিন ডেস্ক: ময়মনসিংহের নান্দাইলে সংঘবদ্ধ নারী চোর ও তাদের পরিবারের মাদক কারবারিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে জেলা পুলিশের কাছে গণস্বাক্ষর দিয়ে অভিযোগ করেছেন এলাকাবাসী।
বুধবার (১২ এপ্রিল) শতাধিক মানুষের স্বাক্ষরসহ অভিযোগপত্রটি নান্দাইল থানায় জমা দেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা শহীদুল ইসলাম পিয়ারুল ও শিক্ষক শফিকুল ইসলাম রিপন৷
জানা যায়, উপজেলার গাংগাইল ইউনিয়নের পংকরহাঠি গ্রামের মৃত মধু মিয়ার সাবেক স্ত্রী জোৎস্না বেগম ৩ যুগেরও বেশি সময় ধরে ময়মনসিংহ ও প্বার্শবর্তী বিভিন্ন জেলার জনবহুল স্থানে পকেটমারের কাজ করে আসছে। অবৈধ আয়ের পাশাপাশি স্বামীর সাথে প্রতিদিন সে বসাতো মাদকের আসর। তার স্বামীর মৃত্যুর পর মাদকসেবী এক সঙ্গীর সাথে তার বিয়ে হয়। পরিবারে রেখে যাওয়া দুই মেয়েকে তার হস্তবিদ্যায় পারদর্শী করে তুলে৷ বড় মেয়ে বিউটি, স্বামী-মঞ্জু মিয়া, ছোট মেয়ে নিশি আক্তার, স্বামী-মল্লিক মিয়া উভয়েই মায়ের অনুকরণে পকেটমারের কাজ করে।
পাশাপাশি তাদের ফুফাতো বোন পাপিয়া আক্তার পাখি, স্বামী- মানিক মিয়া এখন প্রতিষ্ঠিত চোর৷ তারা ইতোপূর্বে বিভিন্ন স্থানে ধরা পড়লে গণমাধ্যমেও সংবাদ প্রচার হয়৷ তাদের চুরি করে আনা মোবাইল, স্বর্ণালংকারসহ বিভিন্ন মূল্যবান জিনিস বিক্রি করে তাদের বাড়ির পুরুষরা। পাশাপাশি জোৎস্না বেগমের ছেলে উজ্জ্বল মিয়া মাদক কারবারের সাথে সম্পৃক্ত। সে নিয়মিত স্থানীয় যুবকদের নিয়ে ইয়াবা সেবনের পাশাপাশি বিক্রিও করে থাকে। তার ছোট বোন নিশির স্বামী মল্লিক মিয়া জুয়া, চোরাই মোবাইলের আইএমইআই নাম্বার পাল্টিয়ে বিক্রির কাজে জড়িত।
এদিকে স্বীকৃত পকেটমার পাপিয়া আক্তার পাখির স্বামী মানিক মিয়া তার সাঙ্গপাঙ্গদের নিয়ে নিয়মিত মদ্যপানের আসর বসায়। দিনে-রাতে মদ্যপানের পর তার চিৎকার চেঁচামিতে প্রতিবেশিরা অতিষ্ঠ। সম্প্রতি তাদের এসব অপকর্মের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করায় এলাকাবাসীদের প্রাণনাশসহ মামলা দিয়ে হয়রানি করার চেষ্টা চালায়।
অভিযোগ পত্রে স্বাক্ষরকারী উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা রফিকুল ইসলাম জানান, দীর্ঘদিন ধরে তারা চুরির সাথে জড়িত। আমাদের এলাকায় তাদের মাধ্যমে অনেক নারী চোরের জন্ম হয়েছে। বারবার নিষেধ সত্ত্বেও তারা এই কাজ চালিয়েই যাচ্ছে। তাদের সরবরাহ করা চোরাই মোবাইলের ব্যবসা করে এলাকার অনেক উঠতি বয়সের তরুণ এখন বিপথে। যার জন্য আশেপাশের কয়েক উপজেলায় আমাদের গ্রামের বদনাম ছড়িয়ে পড়েছে।
নান্দাইল প্রেসক্লাবের সভাপতি ও সাংবাদিক নেতা এনামুল হক বাবুল, স্থানীয় ইউপি মেম্বার গোলাপ মিয়া এবং সংরক্ষিত নারী সদস্য বিউটি বেগমও অভিযোগপত্রে স্বাক্ষর করে ব্যবস্থাগ্রহণের জন্য প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
বিএনপি নেতা আলী আসলাম ভুইয়া জানান, চুরির টাকার বদৌলতে তারা প্রশাসনকে হাত করেছে বলে দাবি করে৷ এর ফলে কারও তোয়াক্কা না করে তারা মদ, জুয়া, চুরি চালিয়েই যাচ্ছে৷ পাশাপাশি এলাকাবাসীকেও দিচ্ছে হুমকি।
অভিযোগপত্রের সাথে একমত পোষণ করে, রাজনীতিবিদ, শিক্ষক, সাংবাদিক, শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ীসহ শতাধিক ব্যক্তি স্বাক্ষর দেন।
অভিযোগের বিষয়ে নান্দাইল মডেল থানার এসআই নূরে আলম জানান, আমরা এমন একটি অভিযোগের আবেদন পেয়েছি। ওসি স্যারের সাথে আলাপ করে তদন্ত সাপেক্ষে আমরা আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
আকাশজমিন/এসআর